প্রকাশিত: ২২/০৪/২০১৭ ৭:৪৫ পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক::

চোঁখে চশমা,হাতে চিকিৎসার যন্ত্রপাতি,ফার্মেসীর ভিতরে চেম্বার,চেম্বারে রোগীর লাইন,রোগীদের দেখেশুনে লিখছেন প্রেসক্রিপশন,দিচ্ছেন বিভিন্ন দিক নির্দেশনা, এভাবে চলছে টেকনাফ বাহারছড়ায় ভূয়া ডাক্তারদের অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা নামে রক্ত শোষণ। তারা আইনের প্রতি কোনো তুয়াক্কা না করে বেপরোয়া ভাবে শুধু মাত্র নিজ লাভের জন্য সামান্য সমস্যায় রোগীদেরকে ব্যাপক হারে ঔষুধ সেবন করাচ্ছেন বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ফলে সামান্য সমস্যায় ব্যাপক ঔষুধ সেবন করার কারণে বাহারছড়ার মানুষের শরীরের ভারসাম্য রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ কোষগুলো নষ্ট হচ্ছে বলে বাহারছড়ার সতেচন মহল মনে করেন। অনুসদ্ধানে দেখা গেছে বাহারছড়ার বেশী ভাগ ডাক্তার তাদের ঔষুধ লিখনির প্যাডের মধ্যে বেশ কয়েকটি ডিগ্রি অর্জন লেখা থাকলেও মুলত সেই ডিগ্রির সনদ পত্র সাংবাদিকদের দেখাতে বললে, তার মধ্যে শামলাপুর বাজারের ডাঃ দীপক, ডাঃ মাকসুদুর রহমান সিভিল সার্জন সাক্ষরিত একটি সনদ দেখাতে পারলেও তাদের প্যাডের মধ্যে লেখা বাকী একাডেমিক সনদ গুলো দেখাতে পারেনি। তবে তারা যে হারে বাহারছড়ার রোগীদের ব্যাপক হারে দীর্ঘ মেয়াদী এন্টিবায়েটিক সহ মোটা তাজা হওয়ার জন্য বিভিন্ন ঔষুধ সেবন করাচ্ছেন তা একজন পল্লী ডাক্তারে চিকিৎসার নিয়মে মধ্যে পড়ে কিনা?এমন প্রশ্নের জবাবে তারা স্বীকার করে নেন, আসলে পড়েনা। অন্য দিকে শামলাপুর বাজারের আরও বেশ কয়েকজন ভূয়া ডাক্তার আছে যাদের প্যাডের মধ্যে ভূয়া ডিগ্রি ও ঔষুধ লেখনি দেখে রীতিমত শিউরে উঠবে যে কোনো বিষেশজ্ঞ ডাক্তার ও সতেচন মানুষ।

ডাঃ জহির উদ্দীন আরমান: আজ থেকে ৬-৭ বছর আগে জীবিকার তাগিদে ভূয়া ডাক্তার জহির উদ্দীন আরমান পালংখালী থেকে গ্রাম্য ডাক্তারী করতে শামলাপুরে আগমন করেন, বর্তমানে তিনি শামলাপুরে বাহারছড়া ফার্মেসী নামক একটি ফার্মেসীতে চেম্বার করেন। আর জহির ডাক্তার শামলাপুরে আসার বেশ কয়েক বছর যাবত তার তেমন রোগী ছিলনা। অনেক রোগী তার কাছ থেকে প্রতারিত হয়ে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।পরবর্তীতে তার অবৈধ চিকিৎসার ব্যাপক লাভ ধারণ করার জন্য তিনি বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন। তিনি তার কাছে আসা রোগীদের সামান্য সমস্যায় ব্যাপক হারে এন্টিবায়েটিক সহ দীর্ঘ মেয়াদী বিভিন্ন ঔষুধ তার প্রেসক্রিপশনে লিখে দিতে থাকেন। আর গ্রাম্য অশিক্ষিত গরিব মানুষেরা রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার আশাই কষ্ট হলেও সেই ঔষুধ সেবন করেন। আবার অনেকে কিছু দিন ভাল থাকলেও বিনা কারণে ব্যাপক এন্টিবায়েটিক সেবন করার কারণে তারা পরবর্তীতে খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তারা ভাল ডাক্তার দেখার জন্য কক্সবাজার ও চট্রগ্রাম আসেন। আর বিশেষজ্ঞ ডাত্তাররা শামলাপুরে অনেক রোগীর বিনা কারণে ব্যাপক ঔষুধ সেবন দেখে শিউরে উঠেন বলে অনেক রোগী জানান। আর জহির ডাক্তারের বিরুদ্ধে একটি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে যে তিনি বিভিন্ন নিম্ন মানের ঔষুধ কোম্পানির সাথে মাসিক একটি সমঝোতা করে রোগীদের ব্যাপক হারে নিম্নমানের ঔষুধ সেবন করাচ্ছেন। তিনি একজন সাধারণ গ্রাম্য ডাক্তার হয়েও তার এলাকা পালংখালীতে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে তিনি বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান করছেন বলে জানা যায়। আর জহির ডাক্তারের অর্জিত ডাক্তারি সনদ পত্রের ব্যাপারে সাংবাদিকরা তার চেম্বারে কথা বলতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পাঠান যে সাংবাদিকদের তিনি কোনো সনদ পত্র দেখাবেন না।

ডাঃ আবদুল কুদ্দুস: পটিয়া থেকে আসা ডাঃ আবদুল কুদ্দুসের নেই কোনো ডাক্তারী সনদ পত্র। তিনি শুধু মাত্র তার অভিজ্ঞার উপর ভিক্তি করে গ্রাম্য ডাক্তারি করছেন বলে জানান। আর তার প্যাডের মধ্যে লেখা বিভিন্ন ডিগ্রি তিনি কেন লিখেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তার কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। তিনি শুধু অভিজ্ঞার উপর ভিক্তি করে রোগীদেরকে যে হারে দীর্ঘ মেয়াদী ঔষুধ ব্যবহার করাচ্ছেন তা অন্যায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি স্বীকার করেন নেন আসলে এটা অন্যায়।

ডাঃ অমর কান্তি নাশ: ডাঃ অমর কান্তি নাথ চিকিৎসার ক্ষেত্রে শামলাপুরে সতেচন মানুষের কাছে এক আতংকের নাম। তার কাছে কোনো মানুষ যদি খুব অল্প সময়ে মোটা তাজা হওয়ার জন্য আসে তাহলে তিনি ক্ষতিকারক ঔষুধ সেবনের মাধ্যমে সেই মানুষ গুলোকে মোটা তাজা করে দেন। অথচ তিনি নিজ লাভের স্বার্থে সেই মানুষ গুলোকে ঐ ঔষুধ সেবনে শরীরে কি পরিমান ক্ষতি হবে তা তাদের কাছে তুলে ধরেন না। অন্য দিকে তার ঔষুধ লিখনির প্যাডের মধ্যে বেশ কয়েকটি ডিগ্রি অর্জন লেখা থাকলেও সেই ডিগ্রির সনদ গুলো সাংবাদিকদের দেখাতে বললে তিনি সনদ গুলো তার কক্সবাজারে বাসায় আছেন বলে জানান। অবশ্যই দুই দিন পর তার সনদ গুলো সাংবাদিকদের দেখাবে বললেও ডাঃ অমর এক সাপ্তাহ পরও তার ডাক্তারী সনদ গুলো দেখাতে পারেনি। তিনি একজন সামান্য গ্রাম্য ডাক্তার হয়েও শামলাপুরে এখন তিনি লক্ষ লক্ষ টাকার সম্পদের মালিক। একটি সূত্রে জানা গেছে ডাক্তার অমরে প্রত্যেক মাসে একটি বড় অংকের মুনাফা আসে নিম্ন মানের ঔষুধ কোম্পানির কাছ থেকে। তার সাথে বিভিন্ন নিম্নমানের ঔষুধ কোম্পানির সাথে মাসিক চুক্তি আছে বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। ফলে সাধারণ রোগীরা তার উপর বিশ্বাস করে নিম্নমানের ঔষুধ সেবন করেও কোনো ফলাফল না পেয়ে প্রতারিত হয়ে ভাল চিকিৎসার জন্য অন্য চেষ্টা করেন বলে জানা যায়। এভাবে চলছে ডাক্তার অমরের অবৈধ চিকিৎসার বাণিজ্য। আর উল্যেখিত বেশ কয়েকজন ভূয়া ডাক্তার নিজেই ফার্মেসীর মালিক বলে স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে। তাছাড়া বাহারছড়ায় আরো বেশ কয়েকজন ভূয়া ডাক্তার রয়েছে যারা কোনো প্রশিক্ষন বা ডিগ্রী ছাড়া গ্রামের মানুষের সাথে প্রতারণা করে চিকিৎসা নামে তাদের অবৈধ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন তার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হল হাজম পাড়ার রানা ডাক্তার, জাহাজপুরার দুলাল ডাক্তার, শামলাপুর বাজারের আকতার ডাক্তার, নির্মল ডাক্তার, তাহের ডাক্তার, মোবারক ডাক্তার, সহ আরো অনেকে। তাই বাহারছড়ার সতেচন মানুষের একটাই দাবী এই ভূয়া ডাক্তারদের বিরুদ্ধে অতি শ্রীঘ্রই প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হোক, এবং বাহারছড়ার মানুষদের প্রতারনার হাত থেকে রক্ষ করা হোক। এ বিষয়ে বাজারছড়া স্বাস্থ্য অফিসার মোঃ নুরুল আলম বলেন বাহারছড়ার পল্লী চিকিৎসকরা ভূয়া ডিগ্রি লিখে যে হারে রোগীদের কে প্রতারিত করতেছে তা শিউরে উঠার মত তারা মানব স্বাস্থ্যের কোনো কিছু না ভেবে শুধু নিজ লাভের আশায় রোগীদের কে বিনা কারণে মেডিসিন সেবন করাচ্ছে। অন্য দিকে এই বিষয়ে বাহারছড়া সরকারী পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের ইনচার্জ মোঃ আমান উল্লাহ বলেন একজন পল্লী চিকিৎসক কখনো ডাক্তার লিখতে পারেনা, আর বাহারছড়ায় যারা পল্লী চিকিৎসক তারা আইনের প্রতি কোনো তুয়াক্কা না করে যে হারে মানুষদেরকে মেডিসিন সেবন করাচ্ছে তা মানব স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকারক বলে আমি মনে করি।

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তা রক্ষায় সাংবাদিকদের সহযোগিতা চাইল ৮ এপিবিএন

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত রাখতে গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করেছে ৮ আর্মড পুলিশ ...

জামিনে মুক্তি পেলেন উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন, গ্রামে আনন্দের বন্যা

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। মঙ্গলবার ...